বঙ্গসন্তান ও বঙ্গঅভিভাবককুল,
রবি ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকীর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে স্বীকার করতে দ্বিধা নেই তিনি আজ ও সমান প্রাসঙ্গিক । এমন বলার কারণ ক্রমশ প্রকাশ্য।
পৃথিবীর উত্তরপশ্চিম কোণ টাকে সুদূর ,সুদৃশ্য এবং সুবাসযোগ্য মনে করে পৃথিবীর দক্ষিণপূর্ব কোণ থেকে বাক্স প্যাটরা গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম বেশ কয়েক বছর আগে । ভুলে গেছিলাম রবি ঠাকুরের বঙ্গমাতা কবিতা খানা । ছোটবেলায় পড়া তো – ভুলতে বসেছিলাম যে বাঙালি হতে পারি মনে প্রাণে কিন্তু মানুষ এখনো হয়ে ওঠা হয়নি। আমিও সেই অযোগ্য সাত কোটি বঙ্গসন্তানদের মধ্যে অন্যতমা। দুই মাস বাদে যখন বঙ্গদেশ থেকে বঙ্গজননী (আমার মা ) পদার্পন করলেন, তখন প্রাণে বল এলো, শরীরে শক্তি এলো। আজ ও এত বছর বাদে “বঙ্গমাতা” কবিতাটি তাই এত প্রাসঙ্গিক এই প্রজন্মের মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে সবার কাছে। সন্তানকে বড়ো করে তোলার সময় অফুরন্ত আদর ও ভালোবাসার সাথে “Lifeskills” বা বেঁচে থাকার বিদ্যে টা আমাদের আগের প্রজন্ম আমাদের না শেখানোর শাস্তি কি আমরা ই পাচ্ছিনা?
আমাদের আগের প্রজন্ম পর্যন্ত মহিলা দের ঘরের কাজে পারদর্শী করে তোলা হতো, তাই তারা বিদেশ বিভূঁইয়ে গিয়ে অনায়াসে সংসার সামলে নিতো পুরুষ জাতির কোনো সাহায্য ছাড়া ই।তাতে তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম হতো কিন্তু সবাই দুধে ভাতে থাকত। তাতে পুরুষ জাতি একা ই আদর পেয়ে পেয়ে বানর প্রজাতির সংখ্যা বাড়াতো।
পরবর্তীযুগে অভিভাবক কুল মেয়েদের ও সমান আদর দিতে শুরু করায় “মর্কট” প্রজাতি র ভিড়ে বঙ্গদেশে টেকা দায় হল। তাতে লাভের লাভ কিছু হলো না শুধু সংসার হয়ে উঠলো পাকা ঢেঁড়শ এর মতো – গেলা ও যায় না ফেলাও যায় না। সকাল বিকেল মন শুধু প্রার্থনা করে বঙ্গজননী কে ,যদি তিনি কোনোভাবে উদয় হন এবং প্রাণদান করেন।
তাই নিজে অভিভাবক হয়ে আজ জীবনের মধ্য গগনে দাঁড়িয়ে সকল বঙ্গ জননী ও পিতাদের উদ্দেশে এটুকু ই বলতে চাই যে হে অভিভাবক বৃন্দ ,সন্তান প্রতিপালোন করার সময় আদর দেওয়া ভালো এবং স্বনির্ভর হওয়ার শিক্ষাপ্রদান করাও অত্যন্ত উঁচুমানের চিন্তাভাবনা – তবে শুধু আর্থিকভাবে নয়, জীবন যুদ্ধের (ও সংসার যুদ্ধের ) প্রতিটি পদক্ষেপে যেন বঙ্গসন্তানরা স্বনির্ভর হয়।
বি: দ্র: রবি ঠাকুরের বঙ্গমাতা কবিতা টি এই সুযোগে পড়ে নেবেন , নয়তো পিছিয়ে পড়বেন 🙂